অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের অষ্টম অধ্যায়ে ‘ধৈঞ্চা’

ধৈঞ্চা একটি শিমজাতীয় গাঢ় সবুজ রঙের একবর্ষজীবী উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Sesbania bispinosa। সেসবানিয়া গণের অন্তর্ভুক্ত এটি একটি ছোট উদ্ভিদ। এটি লম্বায় সাত মিটার পর্যন্ত হতে পারে। বাংলা ও হিন্দিতে একে ধৈঞ্চা বা ধইঞ্চা। ধৈঞ্চায় যথেষ্ট পাতা জন্মাতে দেখা যায়, তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পায় এবং অল্প সময়ে পূর্ণতা প্রাপ্ত হয়।

ধৈঞ্চা এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকার স্থানীয় উদ্ভিদ। সিক্ত ও ভারী মাটিতে অভিযোজিত উদ্ভিদ হলেও খরাপ্রবণ বা বালুময় এলাকায়ও সহজে চাষ করা যায়। এর বাকল তন্তুময়, কাণ্ড শাঁসযুক্ত ও বলিষ্ঠ এবং ফুল হলুদ বর্ণের। মটরশুঁটির মতো ফল উৎপাদন করে, যার মধ্যে হালকা বাদামি রঙের বীজ থাকে।

সবুজ সার, জ্বালানি ও পশুখাদ্য হিসেবে ধৈঞ্চার ব্যবহার রয়েছে। দড়ি, মাছ ধরার জাল, চটের কাপড় ও নৌকার পালের কাপড় তৈরিতেও কাজে লাগে। এর তন্তু বার্চগাছের তন্তুর মতো হওয়ায় কাগজ তৈরির কাঁচামাল হিসেবেও ব্যবহৃত হতে পারে। এর শস্যবীজ মুরগির খাবার হিসেবে ব্যবহার্য।

নাইট্রোজেন সংবন্ধনের মাধ্যমে মাটির উর্বরাশক্তি বৃদ্ধি করতে পারে ধৈঞ্চা।

ধৈঞ্চার ফল বহুকাল ধরে বিভিন্ন চর্মরোগ সংক্রমণের প্রতিকারে ব্যবহৃত হচ্ছে।

ধৈঞ্চার হলুদ ফুল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। মূলত থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে এর কদর বেশি।

ধৈঞ্চা চাষে এক বিঘা জমিতে তিন কেজি বীজ লাগে। এর চাষে বীজ ছাড়া আর কোনো খরচ হয় না। মাত্র পাঁচ-ছয় মাসে সামান্য খরচে উৎপন্ন ধৈঞ্চার খড়ি বিক্রি করে ভালো আয় করা যায়। এ ছাড়া কোনো জমি উর্বর না থাকলে সবুজ ধৈঞ্চা কেটে ওই জমিতে ফেলে পচিয়ে দিলে উত্তম সবুজ সার হিসেবে উর্বরতা বাড়ায়। মাটির অম্লত্ব ও লবণাক্ত ভাব কমাতে সবুজ সার যথেষ্ট সহায়ক।

ধৈঞ্চা দিয়ে সবুজ সার প্রস্তুতের পর আমাদের দেশে প্রায় জমিতেই রোপা আমন ধান লাগানো হয়। এটি বেশ লাভজনক।

শিক্ষা

Leave a Comment