অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের অষ্টম অধ্যায়ে ‘চিড়া’র কথা

বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের একধরনের পরিচিত খাবার হচ্ছে চিড়া। বাংলাদেশের সীমান্ত কিছু এলাকায় একে চিড়িও বলে। প্রায় সব ধরনের ধান থেকে চিড়া তৈরি হয়। তবে সালকেলি নামে এক ধরনের ধান থেকে লালচে ও সুস্বাদু চিড়া তৈরি হয়। সব ভাষাভাষী-জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে চিড়া সর্বজনীন। মূলত নিরামিষ খাবার হিসেবেই খাওয়া হয়। যেহেতু দেখতে চ্যাপ্টা, চাপ দিয়ে ধান চ্যাপ্টা করা হয়, তাই একে ইংরেজিতে বিটেন রাইস বা ফ্লাটেন্ড রাইস বলা হয়। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চিড়াকে বিভিন্ন নামে ডাকে। যেমন—হিন্দিতে পোহা বা পাউয়া, কন্নড় ভাষায় আভালাক্কী, গুজরাটিতে পাউয়া, রাজস্থানি ভাষায় পোয়া, তামিলে আভাল বলা হয়।

শুকনো বা ভেজা দুই অবস্থায়ই চিড়া খাওয়া যায়। শিশু, যুবক, বয়স্ক সবাই খেতে পারে। পানি, দুধ, গুড়ের রস এবং অন্যান্য তরল জাতীয় পদার্থ খুব সহজে চিড়া শুষে নিতে পারে। শুকনো চিড়া গুড়ের পাটালি দিয়েও খাওয়ার রীতি আছে। এটা খুব সহজে হজম হয়। মিষ্টির দোকানগুলোতে দই-চিড়া একটি বহুল প্রচলিত খাবার।

সরাসরি চাল থেকে চিড়া তৈরি করা যায়। ধান চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে সামান্য ভেজে ঢেঁকিতে কুটলে চিড়া তৈরি হয়ে যায়। ইদানীং মেশিনেই ভাঙানো হয়। চিড়া চালের থেকে হালকা ও সহজে বহনযোগ্য। এমনকি চালের থেকে বেশি দিন ঘরে রাখা যায়। এটি সহজপাচ্য খাবার। ভাতের বিকল্প হিসেবে খাওয়া যায়। কারণ পুষ্টিগুণ চালের কাছাকাছি।

ডায়রিয়া ও আমাশয়ে চিড়া ভেজানো পানি খুবই উপকারী। চিড়া ভেজালে প্রায় চার গুণ বেড়ে যায়। ১০০ গ্রাম চিড়ায় আছে ৩৪৬ ক্যালরি, ৬.৬ গ্রাম আমিষ, ৭৭.৩ গ্রাম শর্করা, ২.০২ মিলিগ্রাম লোহা ও ২৩৮ মিলিগ্রাম ফসফরাস। চিড়ায় আঁশের পরিমাণ অনেক কম থাকে বলে অন্ত্রের প্রদাহ এবং ডাইভারটিকুলাইসিস রোগ প্রতিরোধে উপকারী।

এ ছাড়া এতে পটাসিয়াম ও সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকার জন্য কিডনি রোগীদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত। তবে এতে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকায় ট্রাইগ্লিসারাইডের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায় এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে, যা কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

J.S.C

1 thought on “অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের অষ্টম অধ্যায়ে ‘চিড়া’র কথা”

Leave a Comment