অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের অষ্টম অধ্যায়ে ‘হেলমেট’

হেলমেট মাথার সুরক্ষার জন্য ব্যবহৃত এক ধরনের শিরোস্ত্রাণ বা বর্মবিশেষ। এটি মাথাকে বাইরের আঘাত থেকে রক্ষা করে। এর ব্যবহার কবে থেকে শুরু হয়েছে তা নিশ্চিতভাবে বলা দুষ্কর।

তবে সর্বপ্রথম খ্রিস্টপূর্ব ৯০০ সালে অ্যাসিরীয় সৈন্যদের মাথায় হেলমেট ব্যবহারের কথা জানা যায়। এগুলো মোটা চামড়া বা ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি। যুদ্ধক্ষেত্রে ভোঁতা বস্তু, তলোয়ার ও তীরের আঘাত থেকে মাথার সুরক্ষার জন্য ব্যবহার করা হতো। সৈন্যরা এখনো হেলমেট ব্যবহার করে; কিন্তু এখনকার হেলমেটগুলো সাধারণত প্লাস্টিক বা এজাতীয় হালকা উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়।

বর্তমানে ব্যাপকভাবে হেলমেটের ব্যবহার শুরু হয়েছে। রাস্তায় বের হলেই রংবেরঙের হেলমেট চোখে পড়ে, বিশেষ করে যারা মোটরসাইকেল চালায় তাদের জন্য হেলমেট বাধ্যতামূলক।

মোটরসাইকেল আরোহীদের হেলমেট ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকেও কঠোর আইন করা হয়েছে। হেলমেট ব্যবহার না করলে কোনো পাম্প থেকে তেল কেনাও সম্ভব হয় না। তাই ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় প্রায় প্রত্যেক রাইডারই এখন হেলমেট ব্যবহার করে। এটি এখন ফ্যাশনের অংশও হয়ে উঠেছে। বাইকে চড়ার সময় হেলমেট হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা সরঞ্জাম। বড় থেকে ছোট যেকোনো আকারের হেলমেট পাওয়া যায়।

সম্পূর্ণ মাথা ও মুখ আবৃত করে রাখে এ ধরনের হেলমেট বেশি নিরাপদ। তবে অফিসগামী বাইকাররা অর্ধেক মুখ আবৃত করে এমন হেলমেট বেশি পছন্দ করেন। গরমে এ ধরনের হেলমেট বেশি আরাম দিলেও এটি চালককে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয় না। হেলমেট পরার পর নিরাপত্তার জন্য সব সময় ফিতা শক্ত করে বেঁধে রাখতে হয়।

আমাদের দেশে হেলমেট খুব একটা তৈরি করা হয় না। বেশির ভাগ হেলমেটই আসে ভারত, চীন ও থাইল্যান্ড থেকে। আমেরিকান মান অনুসারে সব মোটরসাইকেলের হেলমেটে ‘DOT’ (Department of Transport)-এর স্টিকারসহ বিক্রয় বাধ্যতামূলক।

এর মানে হচ্ছে, এটা নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় মান অর্জন করেছে। আধুনিক সমাজে মোটরসাইকেল আরোহী ছাড়াও বাইসাইকেল আরোহী, ভবন নির্মাণ শ্রমিক ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা হেলমেট বা প্রতিরক্ষামূলক শিরোস্ত্রাণ ব্যবহার করেন।

এ ছাড়া বিভিন্ন খেলায় যেমন—ক্রিকেট, হকি, বক্সিংয়ে ক্রীড়াবিদরা মাথায় হেলমেট ব্যবহার করেন।

J.S.C