“অন্তরে যাদের এত গোলামির ভাব, তারা বাইরের গোলামি থেকে রেহাই পাবে কি করে?”-বুঝিয়ে দাও,উদ্দীপকের সাংবাদিক শামসুু মিয়ার সাথে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের কোন সাংবাদিকের মিল খুঁজে পাওয়া যায়?,“সংবাদপত্র জাতিগঠন ও স্বাধীনতা অর্জনে বিরাট ভূমিকা রাখে।”- ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর

বিষয়: “অন্তরে যাদের এত গোলামির ভাব, তারা বাইরের গোলামি থেকে রেহাই পাবে কি করে?”-বুঝিয়ে দাও,উদ্দীপকের সাংবাদিক শামসুু মিয়ার সাথে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের কোন সাংবাদিকের মিল খুঁজে পাওয়া যায়?,“সংবাদপত্র জাতিগঠন ও স্বাধীনতা অর্জনে বিরাট ভূমিকা রাখে।”- ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর,

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ

আবদুল মালেক সারাটি জীবন শিক্ষকতা করেছেন, গড়েছেন আলোকিত মানুষ। অবসর গ্রহণের পর তিনি গড়ে তুলেছেন ‘তারুণ্য’ নামে সেবা-সংগঠন। বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজের পাশাপাশি পথশিশুদের শিক্ষাদান, দুর্নীতি-বিরোধী অভিযান, নৈতিকতা ও মূল্যবোধ বিষয়ক সেমিনারের আয়োজন করেন তিনি। অনেকে তাঁর কাজের প্রশংসা করেন আবার নিন্দা ও কটূক্তি করতেও ছাড়েন না কেউ কেউ। তিনি তরুণদের উদ্দেশে বলেন-

  ‘মনেরে আজ কহ যে 

  ভালো মন্দ যাহাই আসুক

  সত্যেরে লও সহজে।’

ক. কাজী নজরুল ইসলামের মতে কোনটি আমাদের নিষ্ক্রিয় করে দেয়?

খ. কবি নিজেকে ‘অভিশাপ রথের সারথি’ বলে অভিহিত করেছেন কেন?

গ. উদ্দীপকে আবদুল মালেকের মাধ্যমে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের যে বাণী উচ্চারিত হয়েছে তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকের কবিতাংশের বক্তব্য চেতনায় ধারণ করে আলোকিত পৃথিবী গড়ে তোলা সম্ভব।- প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর।

ক. জ্ঞান

পরনির্ভরতা আমাদের নিষ্ক্রিয় করে দেয়।

খ. অনুধাবন

সমাজের অনিয়মকে ভেঙে ফেলতে কবির যে অবস্থান, তার প্রেক্ষিতে তিনি নিজেকে ‘অভিশাপ রথের সারথি’ বলে অভিহিত করেছেন।

সমাজের প্রচলিত, পুরাতন নিয়মকে ভেঙে নতুনকে প্রতিষ্ঠা করা খুব সহজ নয়। এতে প্রতিনিয়ত সমাজরক্ষকদের আক্রমণের শিকার হতে হয়, নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। এসব জেনেও কবি তাঁর বিশ্বাসকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। সকল অন্যায়, অবিচার আর অনিয়মের বিরুদ্ধে তিনি অভিশাপ হয়ে আবির্ভূত হয়েছেন। তাই তিনি নিজেকে ‘অভিশাপ রথের সারথি’ বলে অভিহিত করেছেন।

গ. প্রয়োগ

উদ্দীপকের আবদুল মালেকের মাধ্যমে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের সত্য পথের পথিক হওয়ার বাণী উচ্চারিত হয়েছে।

নিজের অন্তরের সত্যকে যারা উপলব্ধি করতে পারে তারাই প্রকৃত মানুষ। তারা সমাজ, দেশ ও জাতির মঙ্গল প্রত্যাশী। এ প্রত্যাশা থেকেই তারা সমাজের কুসংস্কার, মিথ্যা আর ভণ্ডামির মূলোৎপাটন করতে চান। সমাজে প্রতিষ্ঠা করতে চান সত্য ও মনুষ্যত্বকে।

‘আমার পথ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক বলেছেন সত্য পথের কথা। সত্য প্রকাশে তিনি নির্ভীক, অসংকোচ। সত্যের তেজেই তিনি অন্যায়কে ধ্বংস করতে চান। তিনি জাগ্রত করতে চান মনুষ্যত্ববোধকে, মানুষের মূল্যবোধকে। উদ্দীপকের আবদুল মালেকও এ সত্য পথের বাণী উচ্চারণ করেছেন, হৃদয়-সত্যের আলোতে আলোকিত হয়ে সমাজকল্যাণে এগিয়ে এসেছেন।

ঘ. উচ্চতর দক্ষতা

উদ্দীপকের কবিতাংশের বক্তব্য চেতনায় ধারণ করে আলোকিত পৃথিবী গড়ে তোলা সম্ভব-মন্তব্যটি সঠিক।

সত্য তার আপন দীপ্তি ও শক্তিতে ভাস্বর। সত্যের পথই জীবনের প্রকৃত পথ। সত্যের সুন্দর ও নির্মম উভয় রূপই আছে। সত্যের নির্মমতার ভয়ে মিথ্যাকে গ্রহণ করলে সে-মিথ্যাই ধ্বংস ডেকে আনে। তাই সত্য যেমনই হোক তাকে গ্রহণ করতে হবে, হৃদয়ে ধারণ করতে হবে।

‘আমার পথ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক তাঁর অন্তরের সত্যকে উন্মোচিত করেছেন। তিনি জানেন এ সত্য যত নির্মমই হোক না কেন, এ সত্যই তাঁকে পথ দেখাবে। এ সত্যের আলোতেই তাঁর হৃদয় আলোকিত হয়ে উঠবে। তিনি এটা বিশ্বাস করেন যে, সত্যের দম্ভ যাদের মধ্যে রয়েছে তারাই কেবল অসাধ্য সাধন করতে পারেন। উদ্দীপকের কবিতাংশেও এই বিষয়েরই ইঙ্গিত পাওয়া যায়। সত্য যেমনই হোক তাকে স্বীকার করার, হৃদয়ে ধারণ করার শক্তি থাকতে হবে। যাদের হৃদয় সত্যের আলোয় উদ্ভাসিত তারাই আলোকিত পৃথিবী গড়ে তুলতে পারবেন।

যারা সত্য পথের সাধক তারা সমাজে সত্যকে প্রতিষ্ঠা করতে চান। সমাজে সত্য প্রতিষ্ঠিত হলে গোটা পৃথিবী আলোকিত হয়ে উঠবে। আর এ বিচারেই প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটিকে যথার্থ বলা যায়।

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ

সক্রেটিস বলেছেন, ‘know thyself’; সেজন্য আত্মপরিচয় জানা ব্যক্তি সত্যের শক্তিতে ভাস্বর। সে সত্যকে দ্বিধাহীনচিত্তে হাজারবার সালাম জানাতে পারে; কিন্তু মিথ্যাকে মিথ্যার শক্তিতে বলীয়ান শয়তানকে কখনো কুর্নিশ করে না।  সত্যই তার পথপ্রদর্শক। সত্যের আলোয় সে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছতে পারে। সত্য থেকে এক পা বিচ্যুত হলে সে নিজ মনুষ্যত্ব হারাবে।

ক. অতিরিক্ত বিনয় মানুষকে কী করে?

খ. মেয়েলি বিনয়ের চেয়ে অহংকারের পৌরুষ অনেক অনেক ভালো-কেন?

গ. উদ্দীপকের লেখকের ভাবনার সঙ্গে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের ভাবনার তুলনামূলক আলোচনা কর।

ঘ. “উদ্দীপক ও ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের চেতনাগত ঐক্য থাকলেও উদ্দীপকটি প্রবন্ধের সম্পূর্ণ ভাবার্থ নয়।”-উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ কর।

ক. জ্ঞান

অতিরিক্ত বিনয় মানুষকে ছোট করে। 

খ. অনুধাবন

নিজের সত্যকে অস্বীকার করে অতিরিক্ত বিনয় প্রদর্শন মেয়েলি বিনয়। তার থেকে আত্মবিশ্বাস ও সততার বলিষ্ঠ স্বীকৃতি প্রদর্শন করে পৌরুষকে জাহির করা, যাকে বলা যেতে পারে অহংকারের পৌরুষ, তা অনেক ভালো।

মেয়েলি বিনয় দুর্বলতার নামান্তর; তার চেয়ে নিজেকে চিনে আপনার সত্যকে আপনার গুরু, পথপ্রদর্শক কাণ্ডারি বলে জানা অনেক ভালো। কেউ কেউ এটাকে অহংকার বলে মনে করতে পারে। আত্মবিশ্বাসের স্বীকৃতি এ অহংকারকে পৌরুষের অহংকার বলাই সংগত। মেয়েলি বিনয়ের চেয়ে এ পৌরুষের অহংকার অনেক অনেক ভালো।

গ. প্রয়োগ

উদ্দীপকের লেখকের ভাবনার সঙ্গে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের ভাবনার গভীর সাদৃশ্য রয়েছে।

মানুষের মাঝে আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করতে পারলে সে আপন সত্যের শক্তিতে বলীয়ান হিসেবে সমাজে উঁচু শিরে আত্মমর্যাদা নিয়ে বাঁচতে পারে। তাকে কেউ মিথ্যার ঘোরে ফেলে বিভ্রান্ত করে স্বার্থ হাসিল করতে পারে না।

উদ্দীপকে দেখা যায়, আত্মশক্তির জাগরণ ও মিথ্যার প্রতি ঘৃণা প্রদর্শনের ফলে একজন মানুষ প্রকৃত মানবিক মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হতে পারে। তখন তার মধ্যে ফুটে ওঠে আত্মমর্যাদাবোধ। অন্যদিকে, ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে যথেষ্ট যুক্তি-তর্ক ও বলিষ্ঠতার সাথে মানুষের আত্মমর্যাদাবোধ জাগ্রত করে সত্যের শক্তিতে পথ চলার কথা বলা হয়েছে। মানুষ যদি তার আপন শক্তি সম্পর্কে সম্যক ধারণা অর্জন করতে পারে, তাকে জগতের কোনো মিথ্যা শক্তি বা শয়তানের শক্তি পদানত করতে পারে না। এই দাবি নিয়ে সা¤প্রদায়িক ভেদাভেদের শয়তানি জারিজুরির মেকি খোলস উন্মোচন করাই ধূমকেতুর কাজ। তাই উদ্দীপকের লেখকের ভাবনার সঙ্গে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের ভাবনার গভীর সাদৃশ্য রয়েছে বলাই যুক্তিসংগত।

ঘ. উচ্চতর দক্ষতা

“উদ্দীপক ও ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের চেতনাগত ঐক্য থাকলেও উদ্দীপকটি প্রবন্ধের সম্পূর্ণ ভাবার্থ নয়।”- উক্তিটি যথার্থতার দাবিদার।

মানুষের আপন পরিচয় পরিষ্কার হয়ে গেলে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। তার ফলে সে নিজেকে অসীম শক্তির বাহক বলে মনে করে; তখন তাকে মিথ্যা দিয়ে অবনত করে রাখা যায় না। এ রকম আত্মমর্যাদাশীল ব্যক্তি, সাহসী মানুষ সমাজে, দেশে, জাতিতে বৃদ্ধি পেলে ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদের মিথ্যা দেয়াল রচনা করে সত্যের আলো থেকে তাদের দূরে রাখা যায় না।

উদ্দীপকে বলা হয়েছে, আমরা যদি আমাদের তথা সমগ্র জাতির আত্মশক্তিকে আস্থায় আনতে পারি, সত্য-মিথ্যাকে জানতে পারি, তবে আপন আপন পরিচয় স্পষ্ট হয়ে যাবে। আত্মপরিচয় জানা ব্যক্তি সত্যের শক্তিতে ভাস্বর। সে মিথ্যাকে অভিবাদন জানায় না এবং মিথ্যার আধার শয়তানকে কুর্নিশও করে না। সত্যই তার পথপ্রদর্শক। সত্যের আলোতে সে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছে যেতে পারে। আর ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে লেখক আত্মবিশ্বাসী আত্মপ্রত্যয়ী, সত্যের মশাল তাঁর হাতে। সেই আলোয় মিথ্যার কানাগলি তাঁর চোখের সামনে পরিষ্কার। নিজেকে চিনলে, নিজের সত্যকেই কর্ণধার ভাবলে নিজের শক্তির ওপর অটুট বিশ্বাস আসে।

উদ্দীপকে আত্মবিশ্বাস ও আত্মপরিচয় জানা, সত্যকে জানা, সত্যের আলোয় আলোকিত হয়ে সত্যকে পথপ্রদর্শক করে কাক্সিক্ষত গন্তব্যে পৌঁছানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে। আর ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে নিজকে চেনা, আত্মশক্তির আবিষ্কার, তার লক্ষ, উদ্দেশ্য, তার পথচলা সম্পর্কে প্রবন্ধকার যুক্তিনিষ্ঠ ভাষায় বলিষ্ঠ চেতনাজাগানিয়া অনুষঙ্গ তুলে ধরেছেন। আরও বলা হয়েছে, দেশের যারা শত্রু, দেশের যা কিছু মিথ্যা, ভণ্ডামি, মেকি তা সব দূর করতে ‘ধূমকেতু’ হবে আগুনের সম্মার্জনা। অসা¤প্রদায়িক চেতনা, সত্যধর্ম-প্রাণধর্ম প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে ফুটে উঠেছে। আর এসব কিছু প্রদত্ত উদ্দীপকে অনুপস্থিত। তাই প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ ও যৌক্তিকতার দাবিদার।


আরো ও সাজেশন:-

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে লক্ষ লক্ষ জনতার সামনে বঙ্গবন্ধু বলেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম/ এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম- জয় বাংলা!” তার এ ভাষণে জাতির মরা গাঙে যেন ভরা জোয়ার এলো। তাতে জাত-পাতের ভেদাভেদ দূর হলো। হিন্দু-মুসলমান সবাই পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে নেমে পড়ল। দীর্ঘ নয় মাস মুক্তিযুদ্ধ করে ছিনিয়ে আনল লাল-সবুজের রক্তরাঙা পতাকা, স্বাধীন বাংলাদেশ।

ক. ‘আগুনের ঝাণ্ডা’ শব্দের অর্থ কী?

খ. ‘ধূমকেতু’ হবে আগুনের সম্মার্জনা-কেন?

গ. উদ্দীপক ও ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের সাদৃশ্য তুলে ধর।

ঘ. “উদ্দীপক ও ‘আমার পথ’  প্রবন্ধের মূল সুর অভিন্ন”- উক্তিটি কতটুকু যৌক্তিক? ‘আমার পথ প্রবন্ধের আলোকে আলোচনা কর।

ক. জ্ঞান

‘আগুনের ঝাণ্ডা’ শব্দটির অর্থ অগ্নি পতাকা। 

খ. অনুধাবন

‘ধূমকেতু’ হবে আগুনের সম্মার্জনা-কারণ ‘ধূমকেতু’র আগুনের ঝাড়–তে মিথ্যা জাত-পাতের ভেদাভেদ, জাতীয় অন্তরায়, কুসংস্কারের জঞ্জাল জ্বলে-পুড়ে ভস্ম হয়ে যাবে।

সম্মার্জনী বা ঝাড়– দিয়ে ঘরের আঙিনার যাবতীয় ময়লা-আবর্জনা দূর করা হয়। অন্যায়, অসত্য, অসাম্য, মেকি ও ভণ্ডামিপূর্ণ পচা সমাজকে ‘ধূমকেতু’ প্রলয়ঙ্কর ধ্বংস সাধনে নতুন করে গড়বে বলে লেখক ‘ধূমকেতু’কে আগুনের সম্মার্জনী বলেছেন।

গ. প্রয়োগ

উদ্দীপক ও ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে নিবিড় সাদৃশ্য রয়েছে বলা যায়।

ব্যক্তির ক্ষেত্রে যেমন আমিত্ব শক্তিকে চিনতে পারলে বা ব্যক্তির বিকাশে যাবতীয় অন্ধকার টুটে গিয়ে আলোর ঝরনাধারা প্রবাহিত হয়, জাতীয় জীবনেও তেমনটি ঘটে থাকে। তারপর তার কাক্সিক্ষত মুক্তি বা লক্ষ্য অর্জনে সে ছুটে চলে দুর্বার দুর্নিবার গতিতে।

উদ্দীপকে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিস্মরণীয় ভাষণ কীভাবে কেমন করে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা সংগ্রামের সোনালি মোহনায় সমবেত করেছিল তার প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। আর ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে কাজী নজরুল ইসলাম কলম সৈনিক হিসেবে পরাধীন ভারতের শক্তি সংগ্রামের ইশতেহার রচনা করেছেন। তাতে ফুটে উঠেছে ‘ধূমকেতু’ সম্পাদনা ও এর লক্ষ্য উদ্দেশ্য। এদিক থেকে উভয় ব্যক্তির চেতনা একই রকম। তাই বলা যায়, উদ্দীপক ও ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে সাদৃশ্য বিদ্যমান।

ঘ. উচ্চতর দক্ষতা

“উদ্দীপক ও ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের মূল সুর অভিন্ন।”-উক্তিটি অত্যন্ত যৌক্তিক।

মানুষ পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙতে চায়। মানুষ আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদা নিয়ে স্বাধীনভাবে সমাজে অধিকার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে।

উদ্দীপকে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণে ফুটে উঠেছে বাঙালি জাতির দীর্ঘ ইতিহাসে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য অদম্য চেতনার কথা। “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয় বাংলা।” এ ভাষণের মধ্যে রয়েছে জাতীয়তাবোধ, অসা¤প্রদায়িক চেতনাদীপ্ত পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার দৃঢ় চেতনা। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এক জাতি, হিন্দু-মুসলমান কেউ আলাদা নয়। অন্যদিকে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে কাজী নজরুল ইসলাম ‘ধূমকেতু’ পত্রিকার মধ্য দিয়ে বোঝাতে চেয়েছেন, মানব-ধর্মই সবচেয়ে বড় ধর্ম। হিন্দু-মুসলমান মিলনের অন্তরায় বা ফাঁকি কোন খানে তা দেখিয়ে দিয়ে এর গলদ দূর করা এর অন্যতম উদ্দেশ্য।

উদ্দীপকে ‘আমার পথ, প্রবন্ধে ফুটে উঠেছে সর্বপ্রকার কুসংস্কারের মুক্তি, আত্মবিশ্বাস প্রতিষ্ঠা, মিথ্যা দূরীকরণ, ধূমকেতুর ঝাড়– দিয়ে ঝেড়ে-মুছে জাতীয় জীবনের সব-রকম গ্লানি মুক্তির আশাবাদ। তাই উদ্দীপক ও ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের মূল সূর অভিন্ন- উক্তিটি সঠিক ও যথার্থ।

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ

আপসহীন সাংবাদিক শামসু মিয়া আল ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন, স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন, বাঙালির ওপর জাতিগত বৈষম্য দূরীকরণ ও অসা¤প্রদায়িক দেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে। সত্য প্রকাশের অদম্য স্পৃহা থেকেই আল-ইনসাফের সুদীর্ঘ পথ চলা।

ক. ‘ধূমকেতু’র আগুন কোন দিন নিভে যাবে?

খ. “অন্তরে যাদের এত গোলামির ভাব, তারা বাইরের গোলামি থেকে রেহাই পাবে কি করে?”-বুঝিয়ে দাও।

গ. উদ্দীপকের সাংবাদিক শামসুু মিয়ার সাথে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের কোন সাংবাদিকের মিল খুঁজে পাওয়া যায়?- ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “সংবাদপত্র জাতিগঠন ও স্বাধীনতা অর্জনে বিরাট ভূমিকা রাখে।”- ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর।

ক. জ্ঞান

ভুলের ওপর গোঁ ধরে যেদিন বসে থাকবে, ওই দিন ধূমকেতুর আগুন নিভে যাবে।

খ. অনুধাবন

পরাবলম্বন করে ভারতবাসীর বাঁচার মানসিকতা তাদের দাসত্বপ্রবণ ভিতু মনের পরিচয় বহন করে। তা দিয়ে নিজের মুক্তি যখন সম্ভবপর নয়, তখন সে ধরনের গোলাম শ্রেণির মানুষ দিয়ে বিদেশিদের গোলামির শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতা অর্জন করা অসম্ভব।

তাই কবির বক্তব্য, যারা মানসিকভাবে গোলামিকে মেনে নিয়েছে, তারা কীভাবে বাইরের গোলামি থেকে নিজেদের মুক্ত করবে?

গ. প্রয়োগ

উদ্দীপকের সাংবাদিক শামসু মিয়ার সাথে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের লেখক সাংবাদিক কাজী নজরুল ইসলামের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

আত্মশক্তিতে বলীয়ান মানুষ সত্যশক্তিতে উজ্জীবিত হয়ে যে-কাজে হাত দেয়, তা সহজেই তার দ্বারা করা সম্ভব হয়। আত্মবিশ্বাসহীন মানুষ-যার নিজের ওপর বিশ্বাস নেই, তার দ্বারা কোনো মানুষের কোনো কাজের প্রতি অটুট থাকা সহজ নয়।

উদ্দীপকের সাংবাদিক শামসু মিয়া ‘আল-ইনসাফ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা বাঙালির আত্মমর্যাদা, স্বাধিকার আন্দোলন, স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন, জাতিগত আঞ্চলিক বৈষম্য দূরীকরণ, অসা¤প্রদায়িক চেতনায় দেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে আমৃত্যু লড়াই করে গেছেন নানা প্রতিক‚ল শক্তির বিরুদ্ধে। তার প্রতিষ্ঠিত আল-ইনসাফ ঐ আদর্শকে সমুন্নত রেখে সুদীর্ঘকাল পথপরিক্রমা করে চলেছে। ঠিক তেমনি মহৎ উদ্দেশ্য ও লক্ষ নিয়ে কবি, সাংবাদিক কাজী নজরুল ইসলাম জাতিগঠন ও ভারতবর্ষের স্বাধীনতা অর্জনের স্বপ্নে তাড়িত হয়ে ‘ধূমকেতু’ পত্রিকা সম্পাদনার কাজে হাত দেন। এইসব ক্ষেত্রে উভয় সাংবাদিকের চরিত্রে মিল রয়েছে বলা যায়।

ঘ. উচ্চতর দক্ষতা

“সংবাদপত্র জাতিগঠন ও স্বাধীনতা অর্জনে বিরাট ভূমিকা রাখে।”-মন্তব্যটি যথার্থ।

সমাজের লোকদের সংবাদপত্র পাঠের মাধ্যমে সমাজসচেতনতা বৃদ্ধি পায় । আমরা প্রতিদিন সকালবেলা উঠে এককাপ গরম চায়ে মুখ লাগিয়ে একটি দৈনিক পত্রিকার ওপর চোখ বুলিয়ে নিই। দেশের ও বিশ্বের খবর সংবাদপত্রের পাতাতেই বেশি করে লেখা হয়, তা থেকেই দেশের মানুষ বেশি উপকৃত হয়।

উদ্দীপকে সাংবাদিক শামসু মিয়ার ‘আল-ইনসাফ’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ ও উদ্দেশ্য বর্ণিত হয়েছে। বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশে, স্বাধীনতা আন্দোলনে, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় তার  বিশাল ভূমিকা রয়েছে। সমাজ গঠনে, জাতির কল্যাণ কামনায় আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন সাংবাদিক শামসু মিয়া। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে একটি সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার সামনে রেখে ইনসাফের দীর্ঘপথ চলা। একই রকম ভাবে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের লেখক, সাংবাদিক, কবি কাজী নজরুল ইসলাম ‘ধূমকেতু’ পত্রিকা সম্পাদনা করেছিলেন। স্বল্পসময়ের মধ্যে বাঙালির চেতনায় নাড়া দিতে সক্ষম হয়েছিল সাংবাদিক, কবি কাজী নজরুল ইসলাম সম্পাদিত ‘ধূমকেতু’ পত্রিকা। উদ্দীপক ও প্রবন্ধে সংবাদপত্র প্রকাশের অভিন্ন লক্ষ ও উদ্দেশ্য ফুটে উঠেছে।

উদ্দীপক ও ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের পর্যালোচনা শেষে বলা যায়, সংবাদপত্র জাতিগঠন ও স্বাধীনতা অর্জনে বিরাট ভূমিকা রাখে। তাই মন্তব্যটি যথার্থ।



প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক মাধ্যম গুলোতে ও

Leave a Comment