অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন করোনা রোধে কাজ করছে

এখন পর্যন্ত নভেল করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। তবে বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞনীদের নিরলস চেষ্টায় যেকোনো সময় সুখবর পাওয়া যাবে।

এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনটি ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় ভালো ফল দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন গবেষক দলের প্রধান অ্যান্ড্রু পোলার্ড।

গতকাল শুক্রবার আরও ১০ হাজার মানুষের ওপর এই পরীক্ষা সম্প্রসারণের ঘোষণা দিতে গিয়ে এ কথা জানান তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাবসাভিত্তিক ওয়েবসাইট বিজনেস ইনসাইডার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা আভাস দিয়েছেন, নিরাপদ ও কার্যকর রোগ প্রতিরোধী টিকা উদ্ভাবনে ১২-১৮ মাস সময় লাগতে পারে। এ পর্যন্ত মাত্র কয়েকটি টিকা পরীক্ষামূলকভাবে মানবদেহে প্রয়োগ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে এগিয়ে রয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের টিকাটি।

মার্চে যুক্তরাষ্ট্রে ছয়টি ম্যাকাউ বানরের ওপর টিকাটি সফলভাবে প্রয়োগের পর গত ২৩ এপ্রিল দুইজন স্বেচ্ছাসেবীর ওপর এটি প্রয়োগ করা হয়।

গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে অ্যান্ড্রু পোলার্ড বলেন, ‘ক্লিনিক্যাল গবেষণার উন্নতি খুবই ভালো।

টিকাটি বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর কীভাবে কাজ করে, এবার আমরা তা খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নিয়েছি।’

অক্সফোর্ডের গবেষক দল জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যে শিশু এবং ৫৫ বছরের বেশি বয়সী-সহ প্রায় এক হাজার মানুষকে পরীক্ষামূলক টিকা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী ধাপে আরও ১০ হাজার ২৬০ জনকে এই টিকা দেওয়া হবে। এর মধ্যে কিছু শিশু থাকবে। আরও থাকবে ৫৫ বছরের বেশি বয়সের মানুষেরা।

মে এবং জুন মাসের মধ্যে তাদের ওপর পরীক্ষামূলক টিকা প্রয়োগ করা হবে। গবেষণায় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেককে নিজস্ব ডায়েরি সংরক্ষণ এবং নিয়মিত রক্তের নমুনা দিতে বলা হয়েছে।

নতুন এই গবেষণার ফল আগামী দুই থেকে ছয় মাসের মধ্যে পাওয়া যাবে। তবে যুক্তরাজ্যে করোনার সংক্রমণের গতি কমে গেলে গবেষণার অগ্রগতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

কেননা তেমনটা হলে প্রাকৃতিকভাবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা কমে আসবে। এই সমস্যা নিরসনে গবেষকেরা স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদেরকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন যাদের ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

করোনাভাইরাসের টিকা উদ্ভাবনের দৌড়ে থাকা কয়েকটি অভিজাত ল্যাবরেটরির একটি অক্সফোর্ডের গবেষণা প্রকল্পটি। গত সোমবার মার্কিন প্রতিষ্ঠান মডার্না তাদের প্রথম ধাপের পরীক্ষার ইতিবাচক ফলাফল প্রকাশ করে।

বৃহস্পতিবার এই টিকাটি নিয়ে সতর্ক আশাবাদ ব্যক্ত করেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউচি।

এছাড়া ওষুধ প্রস্তুতকারক ফাইজার ও বায়োএনটেক এর যৌথভাবে তৈরি করা টিকাটি গত ৫ মে মানুষের ওপর পরীক্ষা চালানো শুরু হয়েছে। তবে এর ফলাফল এখনও প্রকাশ করা হয়নি।

গত ১১ এপ্রিল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দলের সদস্য অধ্যাপক সারাহ গিলবার্ট জানান, আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ প্রস্তুত হতে পারে তাদের টিকাটি।

এটির ৩০ কোটি ডোজ নিশ্চিত করতে গত বৃহস্পতিবার ১২০ কোটি ডলার পরিশোধে সম্মত হয়েছে মার্কিন সরকার।

এর আগে গত মাসে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ টিকা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া এই টিকাটির ৪ কোটি ডোজ উৎপাদনের ঘোষণা দিয়েছে।

Leave a Comment