বঙ্গবন্ধু হত্যার কারণ গুলো কি, বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল কারণ
বঙ্গবন্ধু হত্যার কারণ গুলো কি, বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল কারণ ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ বাঙালি জাতির জীবনে এক বেদনাবিধুর ও কলঙ্কজনক অধ্যায়। এই দিনে দেশ-বিদেশের স্বাধীনতাবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্যের হাতে ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে বাঙালি জাতির পিতা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শহীদ হন। বঙ্গবন্ধু হত্যার কারণ গুলো কি সেদিন আরো শহীদ হন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী, তিন ছেলেসহ পরিবারের উপস্থিত সব সদস্য, বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি কৃষক নেতা আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ও তার পরিবারের সদস্যরা এবং বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মনি ও তার পরিবারের সদস্যরা। বঙ্গবন্ধুর শিশুপুত্র শেখ রাসেলসহ শেখ মনির অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীও সেদিন রেহাই পাননি। বঙ্গবন্ধুর সামরিক সচিব কর্নেল জামিলও নিহত হন। কামানের গোলার আঘাতে মোহাম্মদপুরে ১৩ জন নিরীহ মানুষও সেদিন নিহত হন। এ ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। ভাগ্যক্রমে সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকয় প্রাণে বেঁচে যান। সেদিন যাদের হত্যা করা হয়েছিল তারা প্রত্যেকেই ছিলেন অত্যন্ত ভালো মানুষ। বাংলাদেশের স্বাধীনতার চরম শত্রু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক অবমুক্ত করা দলিলের ভাষ্যমতে, ‘১৫ আগস্টে কতগুলো খাঁটি দেশপ্রেমিক ও সৎ লোককে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাদের প্রশাসনিক দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে কিন্তু তাদের দেশপ্রেম ও সততা প্রশ্নাতীত।’ একাত্তরের পরাজিত শত্রুর প্রতিশোধস্পৃহা: মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি শাষকগোষ্ঠী এবং তাদের আন্তর্জাতিক মুরব্বিদের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। স্বাধীনতার পর থেকেই পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ভুট্টো বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা চালাতে থাকেন এবং বাংলাদেশের চরম ডান ও বামপন্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বঙ্গবন্ধুকে উত্খাত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। আমেরিকান গবেষক ও লেখক স্টেনলি ওলপার্টের মতে, ‘ভুট্টো দুই বছর ধরে আব্দুল হকসহ অন্যান্য মুজিববিরোধী দলকে অর্থ ও অস্ত্র সাহায্য অব্যাহত রাখেন এবং বিনিময়ে ১৯৭৫ সালের আগস্টে ফল লাভ (মুজিব হত্যা) করেন।’ দুই বৃহৎ শক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরুদ্ধাচরণ করায় বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে তাদের নৈতিক ও বৈষয়িক সমর্থন থাকাটাও অস্বাভাবিক নয়। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড: কারণ ও উদ্দেশ্য বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি: ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ সৃষ্টির (প্রথম বিপ্লব) তিন বছর পর ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু নতুন যে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রবর্তনে উদ্যোগী হন, তাকে তিনি দ্বিতীয় বিপ্লব বলে আখ্যায়িত করেন। দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচির মধ্যে ছিল সরকার পদ্ধতির পরিবর্তন (সংসদীয় পদ্ধতির স্থলে রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থা), সব দল বিলুপ্ত করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব দল ও সব শ্রেণী পেশার মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) নামে একটি জাতীয় দল গঠন, চারটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার অনুমতি, মহকুমাগুলোকে জেলায় উন্নীত করা, জেলা প্রশাসনের দায়িত্বে জনপ্রতিনিধি বা গভর্নর নিয়োগ, সমবায়ভিত্তিক কৃষি উৎপাদন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা, পল্লী অঞ্চলে হেলথ কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা, প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণ, বিচার ব্যবস্থার সংস্কার ইত্যাদি। শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড বঙ্গবন্ধু কর্তৃক দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দেয়ার একটি পটভূমি রয়েছে। স্বাধীনতা-উত্তর বঙ্গবন্ধু সরকারকে এক চরম বৈরী অবস্থায় […]
Continue Reading