অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের একাদশ অধ্যায় ‘রাজবংশী’র

 

https://jobspointbd.com/

My Ads

Google Adsense Ads

অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের একাদশ অধ্যায় ‘রাজবংশী’র

রাজবংশী বাংলাদেশে বসবাসরত একটি ক্ষুদ্রজাতি। দূরাতীতকালে হিমালয় অঞ্চল বা ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা থেকে আসা রাজবংশীরা খর্বকায়, চ্যাপ্টা নাক, উঁচু চোয়ালবিশিষ্ট এক মিশ্র জনগোষ্ঠীর মানুষ।

এরা বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী। বর্তমানে এদের কেউ কেউ মুসলমান, কেউবা খ্রিস্টান। বাংলাদেশে এদের বসবাস প্রধানত রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, বগুড়া ও ময়মনসিংহ জেলায়। ১৯৯১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এদের মোট জনসংখ্যা পাঁচ হাজারের একটু বেশি। রাজবংশীরা মূলত কৃষিজীবী, তবে মাছ ধরা ও মাছ বিক্রয় এদের অন্যতম পেশা। মেয়েরা কুটির শিল্পের কাজে দক্ষ।

পিতা পরিবারের প্রধান। পিতার মৃত্যুর পর পুত্রসন্তান সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয়ে থাকে। ধর্মীয় আচারে শৈব বলে মনে করা হলেও শাক্ত, বৈষ্ণব, বৌদ্ধ, তান্ত্রিক প্রভৃতি বিশ্বাসের সমন্বয়ে তাদের ধর্মীয় আচার পালন করে। এরা প্রকৃতি উপাসকও। পাহাড়, নদী, অরণ্য ও মৃত্তিকার পূজা করে থাকে। খরা ও অনাবৃষ্টি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত ‘হুদুমা’ পূজা রাজবংশীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান।

রাজবংশীরা ধুতি ও জামা পরে। বিয়ের সময় বর-কনে উভয়ই পাড়বিহীন সাদা কাপড় পরে। আগে রাজবংশী নারীরা চার হাত দৈর্ঘ্য ও আড়াই হাত প্রস্থের হাতে বোনা মোটা, বহু বর্ণে রঞ্জিত এক ধরনের বস্ত্র পরিধান করত। এটিকে বলা হতো ‘ফতা’। বর্তমানে সুতার অভাবে এটি আর তৈরি হয় না।

নারীরা বিভিন্ন ধরনের গয়না ব্যবহার করে। চুলের অলংকার হিসেবে তারা সিঁথিপাটি ব্যবহার করে। ওন্তি, এন্তি, সাদিয়া-পাত, গুজি, সোনা, সিসা, চাকি, সাকিরি প্রভৃতি হচ্ছে তাদের কানের অলংকার। গলায় সূর্যহার, চন্দ্রহার, শিকইল হার, কাঠিমালা, ছোরাকাঠি প্রভৃতি অলংকার ব্যবহার করে। কোমরে বিভিন্ন ধরনের খারু, রতনচুর এবং হাতে মোটা-খারু, শাঁখা-খারু, গজরা, সোমপাত্তি প্রভৃতি ূগয়না পরে।

রাজবংশীরা বিভিন্ন গোত্রনাম গ্রহণ করেছে। তাদের গোত্রগুলো হলো—কাশ্যপ, শাণ্ডিল্য, পরাশর, ভরদ্বাজ, গৌতম, সবর্ণ, কপিল প্রভৃতি। রাজবংশীদের কোনো লেখ্য ভাষা বা বর্ণমালা নেই। এদের ভাষা স্থানিক তথা আঞ্চলিক ভাষার এক মিশ্ররূপ। এরা যে আঞ্চলিক মিশ্র ভাষায় কথা বলে তা কারো কারো বিচারে ‘বিকৃত’ বাংলা।

এদের সমাজে বিয়েবিচ্ছেদ, পুনর্বিবাহ ও বিধবা বিবাহ প্রচলিত। তবে বিধবা বিবাহের ক্ষেত্রে দেবরদের দাবি অগ্রগণ্য।

J.S.C

Google Adsense Ads

Google Adsense Ads

Leave a Comment