সূরা বালাদ সকল তথ্য আল কোরআন ও হাদিসের আলোতে,পৃথিবীর জানা অজানা কিছু তথ্য আল বালাদ আলমল ও ফজিলত, সূরা বালাদ কতো বার পাঠ করলে কোন আলম ও ফজিলত, সূরা বালাদ নাযিলের কারন গুলো কি কি ,কুরআন ৯০ সূরা আল - বালাদ

সূরা বালাদ সকল তথ্য আল কোরআন ও হাদিসের আলোতে,পৃথিবীর জানা অজানা কিছু তথ্য আল বালাদ আলমল ও ফজিলত

ইসলাম

Google Adsense Ads

আজকের বিষয়: সূরা বালাদ সকল তথ্য আল কোরআন ও হাদিসের আলোতে,পৃথিবীর জানা অজানা কিছু তথ্য আল বালাদ আলমল ও ফজিলত

নামকরণ :

প্রথম আয়াতে ( আরবী —————————–) এর আল বালাদ শব্দটি থেকে সূরার নামকরণ করা হয়েছে।

নাযিলের সময় কাল :

এই সূরার বিষয়বস্তু ও বর্ণনাভংগী মক্কা মু’আযয্‌মার প্রথম যুগের সূরাগুলোর মতোই । তবে এর মধ্যে একটি ইংগিত পাওয়া যায় , যা থেকে জানা যায় , এই সূরাটি ঠিক এমন এক সময় নাযল হয়েছিল যখন মক্কায় কাফেররা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরোধিতায় উঠে পড়ে লেগেছিল এবং তাঁর ওপর সব রকমের জুলুম নিপীড়ন চালানো নিজেদের জন্য বৈধ করে নিয়েছিল।

বিষয়বস্তু ও মূল বক্তব্য :

একটি অনেক বড় বিষয়বস্তুকে এই সূরায় মাত্র কয়েকটি ছোট ছোট বাক্যে উপস্থাপন করা হয়েছে। একটি পূর্ণ জীবন দর্শন ; যা বর্ণনার জন্য একটি বিরাট গ্রন্থের কলেবরও যথেষ্ঠ বিবেচিত হতো না তাকে এই ছোট্ট সূরাটিতে মাত্র কয়েকটি ছোট ছোট বাক্যে অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী পদ্ধতিতে প্রকাশ করা হয়েছে। এটি কুরআনের অলৌকিক বর্ণনা ও প্রকাশ পদ্ধতির পূর্ণতার প্রমান।

এর বিষয়বস্তু হচ্ছে , দুনিয়ায় মানুষের এবং মানুষের জন্য দুনিয়ার সঠিক অবস্থান , মর্যাদা ও ভুমিকা বুঝিয়ে দেয়া । মানুষকে একথা জানিয়ে দেয়া যে আল্লাহ মানুষের জন্য সৌভাগ্যের ও দুর্ভাগ্যের উভয় পথই খুলে রেখেছেন , সেগুলো দেখার ও সেগুলোর ওপর দিয়ে চলার যাবতীয় উপকরণও তাদেরকে সরবরাহ করেছেন। এবং মানুষ সৌভাগ্যের পথে চলে শুভ পরিণতি লাভ করবে অথবা দুর্ভাগ্যর পথে চলে অশুভ পরিণতির মুখোমুখি হবে , এটি তার নিজের প্রচেষ্টা ও পরিশ্রমের ওপর নির্ভর করে।

প্রথমে মক্কা শহরকে , এর মধ্যে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যেসব বিপদের সম্মুখীন হতে হয় সেগুলোকে এবং সমগ্র মানব জাতির অবস্থাকে এই সত্যটির সপক্ষে এই মর্মে সাক্ষী হিসেবে পেশ করা হয়েছে যে , এই দুনিয়াটা মানুষের জন্য কোন আরাম আয়েশের জায়গা নয়। এখানে ভোগ বিলাসে মত্ত হয়ে আনন্দ উল্লাস করার জন্য তাকে পয়দা করা হয়নি। বরং এখানে কষ্টের মধ্যে তার জন্ম হয়েছে । এই বিষয়বস্তুটিকে সূরা আন নাজমের ( আরবী ( মানুষ যতটুকু প্রচেষ্ট চালাবে ততটুকুর ফলেরই সে অধিকারী হবে।) আয়তটির সাথে মিলিয়ে দেখলে একথা একেবারে সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে , দুনিয়ার এই কর্মচাঞ্চল্যে মানুষের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে তার কর্মতৎপরতা , প্রচেষ্টা , পরিশ্রম ও কষ্টসহিষ্ণতার ওপর।

এরপর মানুষই যে এখানে সবকিছু এবং তার ওপর এমন কোন উচ্চতর ক্ষমতা নেই যে তার কাজের তত্বাবধান করবে এবং তার কাজের যথাযথ হিসেব নেবে , তার এই ভুল ধারণা দূর করে দেয়া হয়েছে।

তারপর মানুষের বহুতর জাহেলী নৈতিক চিন্তাধারার মধ্য থেকে একটি দৃষ্টান্ত স্বরূপ গ্রহণ করে দুনিয়ায় সে অহংকার ও শ্রেষ্ঠত্বের যেসব ভুল মানদণ্ডের প্রচলন করে রেখেছে তা তুলে ধরা হয়েছে। যে ব্যক্তি নিজের বড়াই করার জন্য বিপুল পরিমাণ ধন – সম্পদ ব্যয় করে সে নিজেও নিজের এই বিপুল ব্যয় বহরের জন্য গর্ব করে এবং লোকেরা তাকে বাহবা দেয়। অথচ যে সর্বশক্তিমান সত্তা তার কাজের তত্বাবধান করছেন তিনি দেখতে চান , সে এই ধন সম্পদ কিভাবে উপার্জন করেছে এবং কিভাবে , কি উদ্দেশ্যে এবং কোন মনোভাব সহকারে এসব ব্যয় করছে।

এরপর মহান আল্লাহ বলছেন , আমি মানুষকে জ্ঞানের বিভিন্ন উপকরণ এবং চিন্তা ও উপলদ্ধির যোগ্যতা দিয়ে তার সামনে ভালো ও মন্দ দু’টো পথই উন্মুক্ত করে দিয়েছি। একটি পথ মানুষকে নৈতিক অধপাতে নিয়ে যায়। এ পথে চলার জন্য কোন কষ্ট স্বীকার করতে হয় না। বরং তার প্রবৃত্তি সাধ মিটিয়ে দুনিয়ার সম্পদ উপভোগ করতে থাকে । দ্বিতীয় পথটি মানুষকে নৈতিক উন্নতির দিকে নিয়ে যায়। এটি একটি দুর্গম গিরিপথের মতো। এ পথে চলতে গেলে মানুষকে নিজের প্রবৃত্তি ওপর জোঁর খাটাতে হয়। কিন্তু নিজের দুর্বলতার কারণে মানুষ এই গিরিপথে ওঠার পরিবর্তে গভীর খাদের মধ্যে গড়িয়ে পড়াই বেশী পছন্দ করে।

তারপর যে গিরিপথ অতিক্রম করে মানুষ ওপরের দিকে যেতে পারে সেটি কি তা আল্লাহ বলেছেন। তা হচ্ছে : গর্ব ও অহংকার মূলক এবং লোক দেখানো ও প্রদর্শনী মূলক ব্যয়ের পথ পরিত্যাগ করে নিজের ধন – সম্পদ এতিম ও মিসকিনদের সাহায্যার্থে ব্যয় করতে হবে। আল্লাহর প্রতি ও তাঁর দীনের প্রতি ঈমান আনতে হবে আর ঈমানদারদের দলের অন্তরভুক্ত হয়ে এমন একটি সমাজ গঠনে অংশ গ্রহণ করতে হবে , যা ধৈর্য সহকারে সত্যপ্রীতির দাবী পূরণ এবং আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি করুণা প্রদর্শন করবে। এই পথে যারা চলে তারা পরিণামে আল্লাহর রহমতের অধিকারী হয়। বিপরীত পক্ষে অন্যপথ অবলম্বনকারীরা জাহান্নামের আগুনে জ্বলবে। সেখান থেকে তাদের বের হবার সমস্ত পথই থাকবে বন্ধ।


আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ  


(1

لَا أُقْسِمُ بِهَذَا الْبَلَدِ

শপথ করছি এই নগরের,

লাউকছিমুবিহা-যাল বালাদ।

(2

وَأَنتَ حِلٌّ بِهَذَا الْبَلَدِ

Google Adsense Ads

এবং এই নগরীতে আপনার উপর কোন প্রতিবন্ধকতা নেই।

ওয়া আনতা হিল্লুম বিহা-যাল বালাদ।

(3

وَوَالِدٍ وَمَا وَلَدَ

শপথ জন্মদাতার এবং যা সে জন্ম দিয়েছে তার।

ওয়া ওয়া-লিদিওঁ ওয়ামা-ওয়ালাদ।

(4

لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنسَانَ فِي كَبَدٍ

অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি ক্লেশের মধ্যে।

লাকাদ খালাকনাল ইনছা-না ফী কাবাদ।

(5

أَيَحْسَبُ أَن لَّن يَقْدِرَ عَلَيْهِ أَحَدٌ

সে কি মনে করে যে, তার উপর কেউ ক্ষমতাবান হবে না ?

ওয়া ইয়াহছাবুআল্লাইঁ ইয়াকদিরা ‘আলাইহি আহাদ।

(6

يَقُولُ أَهْلَكْتُ مَالًا لُّبَدًا

সে বলেঃ আমি প্রচুর ধন-সম্পদ ব্যয় করেছি।

ইয়াকূ লুআহলাকতুমা-লাল লুবাদা-।

(7

أَيَحْسَبُ أَن لَّمْ يَرَهُ أَحَدٌ

সে কি মনে করে যে, তাকে কেউ দেখেনি?

আইয়াহছাবুআল্লাম ইয়ারাহূআহাদ।

(8

أَلَمْ نَجْعَل لَّهُ عَيْنَيْنِ

আমি কি তার জন্য সৃষ্টি করিনি চক্ষু যুগল?

আলাম নাজ‘আল্লাহূ‘আইনাইন।

(9

وَلِسَانًا وَشَفَتَيْنِ

তার জিহবা ও ওষ্ঠদ্বয়?

ওয়া লিছা-নাওঁ ওয়া শাফাতাইন।

(10

وَهَدَيْنَاهُ النَّجْدَيْنِ

বস্তুতঃ আমি তাকে দু’টি পথ প্রদর্শন করেছি।

ওয়া হাদাইনা-হুন্নাজদাঈন।

(11

فَلَا اقْتَحَمَ الْعَقَبَةَ

অতঃপর সে ধর্মের ঘাঁটিতে প্রবেশ করেনি।

ফালাকতাহামাল ‘আকাবাহ।

(12

وَمَا أَدْرَاكَ مَا الْعَقَبَةُ

আপনি জানেন, সে ঘাঁটি কি?

ওয়ামাআদরা-কা মাল ‘আকাবাহ।

(13

فَكُّ رَقَبَةٍ

তা হচ্ছে দাসমুক্তি

ফাক্কুরাকাবাহ।

(14

أَوْ إِطْعَامٌ فِي يَوْمٍ ذِي مَسْغَبَةٍ

অথবা দুর্ভিক্ষের দিনে অন্নদান।

আও ইত‘আ-মুন ফী ইয়াওমিন যী মাছগাবাহ ।

(15

يَتِيمًا ذَا مَقْرَبَةٍ

এতীম আত্বীয়কে

ইয়াতীমান যা-মাকরাবাহ।

(16

أَوْ مِسْكِينًا ذَا مَتْرَبَةٍ

অথবা ধুলি-ধুসরিত মিসকীনকে

আও মিছকীনান যা-মাতরাবাহ।

(17

ثُمَّ كَانَ مِنَ الَّذِينَ آمَنُوا وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ وَتَوَاصَوْا بِالْمَرْحَمَةِ

ছু ম্মা কা-না মিনাল্লাযীনা আ-মানূওয়াতাওয়া-সাও বিসসাবরি ওয়াতাওয়া-সাও বিল মারহামাহ।

(18

أُوْلَئِكَ أَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ

তারাই সৌভাগ্যশালী।

উলাইকা আসহা-বুল মাইমানাহ।

(19

وَالَّذِينَ كَفَرُوا بِآيَاتِنَا هُمْ أَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ

আর যারা আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে তারাই হতভাগা।

ওয়াল্লাযীনা কাফারূবিআ-য়া-তিনা-হুম আসহা-বুল মাশআমাহ।

Go to: Top 10 20

(20

عَلَيْهِمْ نَارٌ مُّؤْصَدَةٌ

তারা অগ্নিপরিবেষ্টিত অবস্থায় বন্দী থাকবে।

‘আলাইহিম না-রুম মু’সাদাহ।

Google Adsense Ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *