সূরা গাশিয়া সকল তথ্য আল কোরআন ও হাদিসের আলোতে,পৃথিবীর জানা অজানা কিছু তথ্য আল গাশিয়া আলমল ও ফজিলত, সূরা গাশিয়া কতো বার পাঠ করলে কোন আলম ও ফজিলত, সূরা গাশিয়া নাযিলের কারন গুলো কি কি ,কুরআন ৮৮ সূরা আল - গাশিয়া

সূরা গাশিয়া সকল তথ্য আল কোরআন ও হাদিসের আলোতে,পৃথিবীর জানা অজানা কিছু তথ্য আল গাশিয়া আলমল ও ফজিলত

ইসলাম

Google Adsense Ads

আজকের বিষয়: সূরা গাশিয়া সকল তথ্য আল কোরআন ও হাদিসের আলোতে,পৃথিবীর জানা অজানা কিছু তথ্য আল গাশিয়া আলমল ও ফজিলত

নামকরণ :

প্রথম আয়াতের ( আরবী ————) শব্দকে এর নাম হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।

নাযিলের সময় – কাল :

এ সূরাটির সমগ্র বিষয়বস্তু একথা প্রমাণ করে যে এটিও প্রথম দিকে অবতীর্ণ সূরাগুলোর অন্তরভুক্ত। কিন্তু এটি এমন সময় নাযিল হয় যখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাধারণের মধ্যে ব্যাপকভাবে ইসলাম প্রচারের কাজ শুরু করেন এবং মক্কায় লোকেরা তাঁর দাওয়াত শুনে তাঁর প্রতি উপেক্ষা প্রদর্শন করতে থাকে।

বিষয়বস্তু ও মূল বক্তব্য

এর বিষয়বস্তু অনুধাবন করার জন্য একথটি অবশ্যি সামনে রাখতে হবে যে , ইসলাম প্রচারের প্রথম দিকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রধানত দু’টি কথা লোকদেরকে বুঝাবার মধ্যেই তাঁর দাওয়াত সীমাবব্ধ রাখেন। একটি তাওহীদ ও দ্বিতীয়টি আখেরাত। আর মক্কাবাসীরা এই দু’টি কথা মেনে নিতে অস্বীকার করতে থাকে। এই পটভূমিটুকু অনুধাবন করার পর এবার এই সূরাটির বিষয়বস্তু ও বর্ণনা পদ্ধতি সম্পর্কে চিন্তা – ভাবনা করুন।

এখানে সবার আগে গাফলতির জীবনে আকণ্ঠ ডুবে থাকা লোকদেরকে চমকে দেবার জন্য হঠাৎ তাদের সামনে প্রশ্ন রাখা হয়েছে : তোমরা কি সে সময়ের কোন খবর রাখো যখন সারা দুনিয়ার ওপর ছেয়ে যাবার মতো একটি বিপদ অবতীর্ণ হবে ? এরপর সাথে সাথেই এর বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া শুরু হয়েছে। বলা হয়েছে , সে সময় সমস্ত মানুষ দু’টি ভিন্ন ভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে দু’টি ভিন্ন পরিণামের সম্মুখীন হবে। একদল জাহান্নামে যাবে। তাদের উমুক উমুক ধরনের ভয়াবহ ও কঠিন আযাবের সম্মুখীন হতে হবে। দ্বিতীয় দলটি উন্নত ও উচ্চ মর্যাদার জান্নাতে যাবে। তাদেরকে উমুক উমুক ধরনের নিয়ামত দান করা হবে।

এভাবে লোকদেরকে চমকে দেবার পর হঠাৎ বিষয়বস্তু পরিবর্তিত হয়ে যায়। প্রশ্ন করা হয় , যারা কুরআনের তাওহীদী শিক্ষা ও আখেরাতের খবর শুনে নাম সিটকায় তারা কি নিজেদের চোখের সামনে প্রতি মুহূর্তে যেসব ঘটনা ঘটে যাচ্ছে সেগুলো দেখে না ? আরবের দিগন্ত বিস্তৃত সাহারায় যেসব উটের ওপর তাদের সমগ্র জীবন যাপন প্রণালী র্ভিরশীল তারা কিভাবে ঠিক মরু জীবনের উপযোগী বৈশিষ্ট ও গুণাবলী সম্পন্ন পশু হিসেবে গড়ে উঠেছে , একথা কি তারা একটুও চিন্তা করে না ? পথে সফর করার সময় তারা আকাশ , পাহাড় বা বিশাল বিস্তৃত পৃথিবী দেখে । এই তিনটি জিনিস সম্পর্কেই তারা চিন্তা করে না কেন ? মাথার ওপরে এই আকাশটি কেমন করে ছেয়ে গেলো ? সামনে ওই পাহাড় খাড়া হলো কেমন করে ? পায়ের নীচে এই যমীন কিভাবে বিছানো হলো ? এসব কিছুই কি একজন মহাবিজ্ঞ সর্বশক্তিমান কারিগরের কারিগরী তৎপরতা ছাড়াই হয়ে গেছে ? যদি একথা মেনে নেয়া হয় যে , একজন সৃষ্টিকর্তা বিপুল শক্তি ও জ্ঞানের সাহায্যে এই জিনিসগুলো তৈরি করেছেন এবং দ্বিতীয় আর কেউ তাঁর এই সৃষ্টি কর্মে শরীক নেই তাহলে তাঁকেই একক রব হিসেবে মেনে নিতে তাদের আপত্তি কেন ? আর যদি তারা একথা মেনে নিয়ে থাকে যে সেই আল্লাহর এসব কিছু সৃষ্টি করার ক্ষমতা ছিল , তাহলে সেই আল্লাহ কিয়ামত সংঘটিত করার ক্ষমতাও রাখেন , মানুষের পুর্নবার সৃষ্টি করার ক্ষমতাও রাখেন এবং জান্নাত ও জাহান্নাম বানাবার ক্ষমতাও রাখেন — এসব কথা কোন যুক্তি প্রমাণের ভিত্তিতে মানতে ইতস্তত করছে ?

এ সংক্ষিপ্ত ও অত্যন্ত শক্তিশালী যুক্তি প্রমানের ভিত্তিতে বক্তব্য বুঝানো হয়েছে। এরপর কাফেরদের দিক থেকে ফিরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করা হেয়েছে । তাঁকে বলা হয়েছে , এরা না মানতে চাইলে না মানুক , তোমাকে তো এদের ওপর বল প্রয়োগকারী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়নি । তুমি জোর করে এদের থেকে স্বীকৃতি আদায় করতে পারো না। তোমার কাজ উপদেশ দেয়া। কাজেই তুমি উপদেশ দিয়ে যেতে থাকো। সবশেষে তাদের অবশ্যি আমার কাছেই আসতে হবে । সে সময় আমি তাদের কাছ থেকে পুরো হিসেব নিয়ে নেব। যারা মানেনি তাদেরকে কঠিন শাস্তি দেবো।


আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ  


﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ هَلْ أَتَاكَ حَدِيثُ الْغَاشِيَةِ﴾

১) তোমার কাছে আচ্ছন্নকারী বিপদের খবর এসে পৌঁছেছে কি ?

﴿وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ خَاشِعَةٌ﴾

২) কিছু চেহারা সেদিন হবে ভীত কাতর ,

﴿عَامِلَةٌ نَّاصِبَةٌ﴾

৩) কঠোর পরিশ্রম রত , ক্লান্ত – পরিশ্রন্ত ৷

﴿تَصْلَىٰ نَارًا حَامِيَةً﴾

Google Adsense Ads

৪) জ্বলন্ত আগুনে ঝলসে যেতে থাকবে৷

﴿تُسْقَىٰ مِنْ عَيْنٍ آنِيَةٍ﴾

৫) ফুটন্ত ঝরণার পানি তাদেরকে দেয়া হবে পান করার জন্য৷

﴿لَّيْسَ لَهُمْ طَعَامٌ إِلَّا مِن ضَرِيعٍ﴾

৬) তাদের জন্য কাঁটাওয়ালা শুকনো ঘাস ছাড়া আর কোন খাদ্য থাকবে না৷

﴿لَّا يُسْمِنُ وَلَا يُغْنِي مِن جُوعٍ﴾

৭) তা তাদেরকে পুষ্ট করবে না এবং ক্ষুধাও মেটাবে না৷

﴿وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ نَّاعِمَةٌ﴾

৮) কিছু চেহারা সেদিন আলোকোজ্জ্বল হবে৷

﴿لِّسَعْيِهَا رَاضِيَةٌ﴾

৯) নিজেদের কর্ম সাফল্যে আনন্দিত হবে৷

﴿فِي جَنَّةٍ عَالِيَةٍ﴾

১০) উচ্চ মর্যাদার জান্নাতে অবস্থান করবে৷

﴿لَّا تَسْمَعُ فِيهَا لَاغِيَةً﴾

১১) সেখানে কোন বাজে কথা শুনবে না৷

﴿فِيهَا عَيْنٌ جَارِيَةٌ﴾

১২) যেখানে থাকবে বহমান ঝরণাধারা ৷

﴿فِيهَا سُرُرٌ مَّرْفُوعَةٌ﴾

১৩) সেখানে উঁচু আসন থাকবে ,

﴿وَأَكْوَابٌ مَّوْضُوعَةٌ﴾

১৪) পানপাত্রসমূহ থাকবে ৷

﴿وَنَمَارِقُ مَصْفُوفَةٌ﴾

১৫) সারি সারি বালিশ সাজানো থাকবে

﴿وَزَرَابِيُّ مَبْثُوثَةٌ﴾

১৬) এবং উৎকৃষ্ট বিছানা পাতা থাকবে৷

﴿أَفَلَا يَنظُرُونَ إِلَى الْإِبِلِ كَيْفَ خُلِقَتْ﴾

১৭) (এরা মানছে না ) তাহলে কি এরা উটগুলো দেখছে না , কিভাবে তাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে ?

﴿وَإِلَى السَّمَاءِ كَيْفَ رُفِعَتْ﴾

১৮) আকাশ দেখছে না , কিভাবে তাকে উঠানো হয়েছে ?

﴿وَإِلَى الْجِبَالِ كَيْفَ نُصِبَتْ﴾

১৯) পাহাড়গুলো দেখছে না , কিভাবে তাদেরকে শক্তভাবে বসানো হয়েছে ?

﴿وَإِلَى الْأَرْضِ كَيْفَ سُطِحَتْ﴾

২০) আর যমীনকে দেখছে না ,কিভাবে তাকে বিছানো হয়েছে ?

﴿فَذَكِّرْ إِنَّمَا أَنتَ مُذَكِّرٌ﴾

২১) বেশ (হে নবী ) তাহলে তুমি উপদেশ দিয়ে যেতে থাকো ৷ তুমি তো শুধু মাত্র একজন উপদেশক,

﴿لَّسْتَ عَلَيْهِم بِمُصَيْطِرٍ﴾

২২) এদের উপর বল প্রয়োগকারী নও ৷

﴿إِلَّا مَن تَوَلَّىٰ وَكَفَرَ﴾

২৩) তবে যে ব্যক্তি মুখ ফিরিয়ে নেবে এবং অস্বীকার করবে,

﴿فَيُعَذِّبُهُ اللَّهُ الْعَذَابَ الْأَكْبَرَ﴾

২৪) আল্লাহ তাকে মহাশাস্তি দান করবেন ৷

﴿إِنَّ إِلَيْنَا إِيَابَهُمْ﴾

২৫) অবশ্যি এদের আমার কাছেই ফিরে আসতে হবে ৷

﴿ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا حِسَابَهُم﴾

২৬) তারপর এদের হিসেব নেয়া হবে আমারই দায়িত্ব ৷

Google Adsense Ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *