Google Adsense Ads
যাকাতুল ফিতর (ফিতরা) হিসেবে টাকা দেয়া সুন্নত না কি খাদ্যদ্রব্য? কি কি জিনিস দ্বারা এবং কত পরিমাণ ফিতরা দেওয়া সুন্নত?
➖➖➖➖➖➖
হাদীসে ফিতরা হিসেবে খাদ্যদ্রব্য প্রদানের কথাই বর্ণিত হয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে দিনার-দিরহামের প্রচলন ছিল কিন্তু তারা কখনো খাদ্যদ্রব্য ছাড়া দিনার-দিরহাম বা অন্য কিছু দ্বারা ফিতরা প্রদান করেছেন বলে কোন তথ্য পাওয়া যায় না।
কি কি জিনিস দ্বারা এবং কত পরিমাণ ফিতরা দেওয়া সুন্নত?
এর উত্তর সহীহ হাদীসে স্পষ্ট বর্ণিত হয়েছে যার, ফল কথা হল: খেজুর, যব, কিশমিশ, পনীর কিংবা প্রধান খাদ্য দ্রব্য দ্বারা ফিতরা দেওয়া সুন্নত, মূল্য দ্বারা নয়। আর এক জন ব্যক্তিকে এক সা’ ফিতরা দিতে হবে, যার পরিমাণ সাধারণ মানুষের চার পূর্ণ অঞ্জলি সমান। [ফাতাওয়া মাসায়েল, মাওলানা কাফী, পৃঃ ১৭২-১৭৩] কেজির ওজনে তা আড়াই কিলোর কম নয়।
▪ইবনে উমার (রাযি:) হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন:
‘‘ আল্লাহর রাসূল যাকাতুল ফিতর স্বরূপ এক ’সা কিংবা এক ’সা যব ফরয করেছেন মুসলিম দাস, স্বাধীন ব্যক্তি, পুরুষ ও নারী এবং ছোট ও বড়র প্রতি। আর তা লোকদের নামাযে বের হওয়ার পূর্বে আদায় করে দিতে আদেশ করেছেন”। [ বুখারী, অধ্যায়: যাকাত হাদীস নং ১৫০৩/ মুসলিম নং ২২৭৫]
উক্ত হাদীসে দুটি খাদ্য দ্রব্যের নাম পাওয়া গেল যা, দ্বারা নবীর যুগে ফিতরা দেওয়া হত। একটি হচ্ছে খেজুর অপরটি যব। এবার নিম্নে আর একটি হাদীস পাঠ করুন।
▪আবু সাঈদ খুদরী (রাযি:) বলেন :
‘‘আমরা-নবীজীর যুগে যাকাতুল ফিতর বের করতাম এক শ্বা খাদ্য দ্রব্য কিংবা এক সা’ যব কিংবা এক সা’ খেজুর কিংবা এক সা’ পনীর কিংবা এক শ্বা কিশমিশ’’ [ বুখারী- ১৫০৬ মুসলিম-২২৮১]
এই হাদীসে খেজুর ও যব ছাড়া আরও যে কয়েকটি বস্তুর নাম পাওয়া গেল তা হল : কিশমিশ, পনীর এবং খাদ্য দ্রব্য। উল্লেখ থাকে যে, নবীজীর মৃত্যুর পর মুয়াবিয়া (রাযি:) এর খেলাফত কালে অনেকে গম দ্বারা ফিতরা দিতেন। [ বুখারী হাদীস নং ১৫০৮ মুসলিম ২২৮১ ]
তাই আমরা যদি সুন্নত অনুসরণ করতে চাই তাহলে আমাদের সমাজের প্রচলিত প্রধান খাদ্যদ্রব্য তথা চাল দ্বারা ফিতরা দেয়া কর্তব্য। ফিতরার মুল্য দ্বারা অথবা সেটাকা দিয়ে পোশাক, চিনি, তেল, মসলা, শেমাই, গোস্ত ইত্যাদি কিনে দেয়া সুন্নত পরিপন্থী।
- বাংলাদেশে অনলাইন পর্নোগ্রাফি ও ব্যক্তিগত কনটেন্ট: সামাজিক প্রভাব ও আইনগত বাস্তবতা
- চাকরির প্রস্তুতি সাধারণ জ্ঞান নোবেল পুরস্কার ২০২৫
- ডায়াবেটিস রোগীরা যেভাবে রোজা রাখবে
- World ftp server, BDIX FTP SERVER LIST,Free FTP server, All BD Ftp Server List, ftp server bd
- “লা আদওয়া” সংক্রমণ নেই! হাদীসটি কী বোঝায়?, ইসলাম কি সংক্রামক ব্যাধি সমর্থন করে?,ইসলাম কি ছোঁয়াচে রোগের অস্তিত্ব অস্বীকার করে?
তবে একান্ত জরুরি অবস্থায় টাকা দ্বারা ফিতরা দেয়া যেতে পারে বলে, অনেক আলেম মন্তব্য করেছেন।
যেমন, রোগী ব্যক্তির জন্য এই মুর্হতে টাকা প্রয়োজন। চাল দিলে সেটা বিক্রয় করে টাকা সংগ্রহ করতে গেলে রোগী সমস্যা বেড়ে যেতে পারে…বা এ জাতীয় পরিস্থিতে ফিতরার মূল্য দিলেও আদায় হয়ে যাবে। কারণ এখানে বিশেষ পরিস্থিতে মুল্য দ্বারা ফিতরা প্রদান করা হয়েছে।
সুতরাং আমাদের কতর্ব্য খাদ্যদ্রব্য দেয়া। কেউ যদি তা নিতে না চায় তাহলে এমন ব্যক্তিকে দেয়া উচিৎ যে, তা গ্রহণ করবে।
দুর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, আমাদের দেশের হানাফী সামাজ থেকে খাদ্যদ্রব্য দেয়ার সুন্নতটি প্রায় উঠে যাওয়ার কারণে তারা প্রতি বছর টাকা নির্ধারণ করে থাকেন আর গরীবরাও টাকা ছাড়া অন্য কিছু নিতে চায় না। তবে আল হামদুলিল্লাহ অধিকাশ আহলে হাদীস সমাজে খাদ্যদ্রব্য দেয়ার সুন্নতটি এখনো প্রচলিত রয়েছে।
সৌদি আবরেও এখনো ফিতরা হিসেবে চাল দেয়ার সুন্নতটি চালু আছে। এখানে চেরিটেবল সোসাইটিগুলোতে চাও ও টাকা উভয়টি নেয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে টাকা দ্বারা চাল কিনে গরীবদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
আল্লাহু আলাম
✒✒✒✒✒✒
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
ফিতরার যাকাতের পরিমাণ কত?
ফিতরার সদকাহ ওয়াজেব হল এক সা’ পরিমাণ। এখানে সা’ বলতে মদ্বীনায় প্রচলিত নববী সা’ উদ্দিষ্ট। পৃথিবীর অন্য কোন অঞ্চলে সা’ প্রচলিত থাকলেও তা যদি মাদানী সা’ থেকে মাপে ভিন্ন হয়, তাহলে ফিতরাহ আদায়ের ক্ষেত্রে সে সা’-এর মাপ গ্রহণযোগ্য নয়।
নববী সা’-এর মাপ অনুযায়ী বর্তমান যুগে ভাল ধরনের গমের ওজন হয় ২ কেজি ৪০ গ্রাম।[1] অবশ্য চাল ইত্যাদি সলিট খাদ্য-দ্রব্যের ওজন তার থেকে বেশী হবে। অতএব এক সা’ পরিমাণ খাদ্যের মাঝামাঝি ওজন হবে মোটামুটি আড়াই কেজি মত।[2]
পক্ষান্তরে অর্ধ সা’ গম ফিতরা দেওয়ার ব্যাপারটা মুআবিয়া (রাঃ)-এর নিজস্ব মত; যে মতের বিরোধিতা করেছেন আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ)।
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) যখন আমাদের মাঝে ছিলেন, তখন আমরা ফিতরার সদকাহ প্রত্যেক ছোট ও বড়, সবাধীন ও ক্রীতদাসের তরফ থেকে এক সা’ খাদ্য; এক সা’ পনির, এক সা’ যব, এক সা’ খেজুর অথবা এক সা’ কিসমিস আদায় দিতাম।
এই ভাবেই আমরা সদকাহ আদায় দিতাম; অতঃপর একদা মুআবিয়া বিন আবূ সুফিয়ান হজ্জ অথবা উমরাহ করতে এসে (মদ্বীনায়) এলেন। সেই সময় তিনি মিম্বরে খুতবাহ দেওয়ার সময় লোকেদের উদ্দেশ্যে যে সব কথা বলেছিলেন, তার মধ্যে একটি কথা ছিল এই যে, ‘আমি মনে করি শামের অর্ধ সা’ (উৎকৃষ্ট) গম এক সা’ খেজুরের সমতুল্য।’
ফলে লোকেরা তাঁর এ মত গ্রহণ করে নিল। আবূ সাঈদ বলেন, ‘কিন্ত আমি ততটা পরিমাণ খাদ্যই আজীবন আদায় দিতে থাকব, যতটা পরিমাণ আমি পূর্বে (আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর যুগে) আদায় দিতাম।’[3]
Google Adsense Ads
- বাংলাদেশে অনলাইন পর্নোগ্রাফি ও ব্যক্তিগত কনটেন্ট: সামাজিক প্রভাব ও আইনগত বাস্তবতা
- চাকরির প্রস্তুতি সাধারণ জ্ঞান নোবেল পুরস্কার ২০২৫
- ডায়াবেটিস রোগীরা যেভাবে রোজা রাখবে
- World ftp server, BDIX FTP SERVER LIST,Free FTP server, All BD Ftp Server List, ftp server bd
- “লা আদওয়া” সংক্রমণ নেই! হাদীসটি কী বোঝায়?, ইসলাম কি সংক্রামক ব্যাধি সমর্থন করে?,ইসলাম কি ছোঁয়াচে রোগের অস্তিত্ব অস্বীকার করে?
ত্বাহাবী প্রমুখ হাদীসগ্রন্থের এক বর্ণনায় আছে, আবূ সাঈদ বলেন, ‘ আমি ততটা পরিমাণ খাদ্যই আদায় দিতে থাকব, যতটা পরিমাণ আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর যুগে আদায় দিতাম; এক সা’ খেজুর, এক সা’ যব, এক সা’ কিসমিস অথবা এক সা’ পনীর।’ এক ব্যক্তি তাঁকে বলল, ‘অথবা অর্ধ সা’ গম?’ তিনি বললেন, ‘না। এটা হল মুআবিয়ার মূল্য নির্ধারণ; আমি তা গ্রহণ করি না এবং তার (এ মতের) উপর আমলও করি না।’[4]
এক সা’ গম ফিতরাহ দেওয়ার কথা মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) থেকে প্রমাণিত নয়। যেমন অর্ধ সা’ গম ফিতরাহ দেওয়ার হাদীস সহীহর দর্জায় পৌঁছে না।
বলা বাহুল্য, ফিতরার মূল্য নির্ধারণ সঠিক হবে না। বরং মূল্য প্রত্যেক যুগে এবং প্রত্যেক দেশে ভিন্ন ভিন্ন হবে। কোন সময় এমনও হতে পারে যে, (খেজুরের পরিমাণে) ফিতরায় কয়েক সা’ গম আদায় দিতে হবে।
মোটকথা, সা’-এর পরিমাপকেই ফিতরার মাপকাঠি গণ্য করা হল মৌলিক ব্যাপার এবং তাতেই রয়েছে সর্বপ্রকার খাদ্য এবং সর্বযুগের জন্য পূর্বসতর্কতামূলক আমল। আর এই মত অনুসরণ করার মাধ্যমেই এ ব্যাপারে মতভেদকে এড়ানো সম্ভব হবে এবং মান্য করা হবে সুনিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হাদীসকে।[5]
[1] (আশ্শারহুল মুমতে’ ৬/১৭৬) [2] (তাযকীরু ইবাদির রাহমান, ফীমা অরাদা বিসিয়ামি শাহরি রামাযান ৩১পৃঃ, যাদুস সায়েম অফাযলুল ক্বায়েম ২৯পৃঃ) [3] (বুখারী ১৫০৮, মুসলিম ৯৮৫, আবূ দাঊদ ১৬১৬নং) [4] (ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ৩/৩৩৯) [5] (ফিকহুয যাকাত২/৯৪০-৯৪১, আশ্শারহুল মুমতে’ ৬/১৭৯-১৮০)
শাইখ আবদুল হামিদ ফাইযী
- বাংলাদেশে অনলাইন পর্নোগ্রাফি ও ব্যক্তিগত কনটেন্ট: সামাজিক প্রভাব ও আইনগত বাস্তবতা
- চাকরির প্রস্তুতি সাধারণ জ্ঞান নোবেল পুরস্কার ২০২৫
- ডায়াবেটিস রোগীরা যেভাবে রোজা রাখবে
- World ftp server, BDIX FTP SERVER LIST,Free FTP server, All BD Ftp Server List, ftp server bd
- “লা আদওয়া” সংক্রমণ নেই! হাদীসটি কী বোঝায়?, ইসলাম কি সংক্রামক ব্যাধি সমর্থন করে?,ইসলাম কি ছোঁয়াচে রোগের অস্তিত্ব অস্বীকার করে?
Google Adsense Ads