এইচএসসি বাংলা সাহিত্যপাঠ বইয়ের অপরিচিতা গল্পে হুঁকার উল্লেখ আছে

 

https://jobspointbd.com/

My Ads

Google Adsense Ads

এইচএসসি বাংলা সাহিত্যপাঠ বইয়ের অপরিচিতা গল্পে হুঁকার উল্লেখ আছে

হুঁকা ধূমপান করার একটি মাধ্যম। অনেকে একে ধূমপান পাইপ, নল জল, হুক্কা বা হুঁকি নামেও ডেকে থাকে। আরবি শব্দ হুক্কা থেকে হুঁকা শব্দটি এসেছে। এর অর্থ গোলাকার কৌটাবিশেষ। বাংলাসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন ভাষায় হুঁকা শব্দটি প্রচলিত।  ফরাসি লেখক লুই রুসলেটের লেখা থেকে জানা যায়, আকবরের চিকিৎসক হাকিম আবুল ফতেহ গিলানি ওই সময় ভারতে হুঁকা আবিষ্কার করেন।

আর সেখান থেকেই গোটা ভারতবর্ষে হুঁকা ছড়িয়ে পড়ে। মোগল যুগে এ দেশে ব্যবসারত ইংরেজ ও অন্য ইউরোপীয়রা হুঁকাকে সম্বোধন করত ‘হাবল-বাবল’ (hubble-bubble) বলে। ধূমপানের সময় হুঁকা থেকে বুদবুুদ শব্দে ধোঁয়া নির্গত হতো বলে উক্ত নাম দেওয়া হয়।

হুঁকা অনেক রকম হয়ে থাকে। সাধারণত গ্রামবাংলায় হুঁকা তৈরি করা হয় নারকেলের খোল (মালা) বা মাটির পাত্র দিয়ে। নারকেলের খোল বা মাটির পাত্রের সঙ্গে বাঁশের বা কাঠের নল সংযুক্ত করা থাকে এবং ছিলিম বা কল্কি নামের একটি ছোট পাত্র নলের মাথায় জুড়ে দেওয়া হয়।

ছিলিম বা কল্কি হচ্ছে একটি ফাঁপা কৌণিক ছোট পাত্র, যাতে ধূমপানের জন্য প্রস্তুতকৃত তামাক ও জ্বলন্ত কাঠকয়লা পুরে দেওয়া হয়। নারকেলের খোল বা মাটির পাত্রে একটি ছিদ্র থাকে, যেখানে ঠোঁট লাগিয়ে ছিলিম বা কল্কির ধোঁয়া টেনে নেওয়া হয়। হুঁকায় ব্যবহারের জন্য তামাক পাতা কেটে গুঁড়া করে এর সঙ্গে ঝোলাগুড় বা চিটাগুড় ভালোভাবে মাখানো হয়।

উচ্চ, অভিজাত শ্রেণির ব্যবহৃত হুঁকাকে বলা হয় ফারসি (পার্শিয়ান) হুঁকা, যার নিচের অংশের গঠনাকৃতি অন্যান্য হুঁকার চেয়ে ভিন্ন ও বিচিত্র। সাধারণ হুঁকায় যে ধরনের ছিদ্র থাকে, ফারসি হুঁকায় তার বদলে থাকে একটি পাইপ বা নল। ফারসি হুঁকার গায়ে ও ছিলিমপাত্রে নানা কারুকার্য থাকে। অভিজাত ব্যক্তিরা উন্নতমানের তামাক ব্যবহার করে, যা উত্কৃষ্ট চিটাগুড় ও অন্য সুগন্ধিযুক্ত মসলাপাতি দিয়ে মাখানো হয়।

রাজকীয় ব্যক্তি, জমিদার, অভিজাত ও বিত্তবান শ্রেণির হুঁকা বিচিত্র কারুকার্যে নকশামণ্ডিত করা হতো। উচ্চ অভিজাত শ্রেণির হুঁকা সাধারণত নানা ধাতব পদার্থ দিয়ে তৈরি হতো। এর ধূমপানের নল বেশ লম্বা, যাতে হুঁকা স্থানান্তর না করেও দূর থেকে ধূমপান করা যায়। হুঁকা ব্যবহারের সুবর্ণ যুগে এটি ছিল ব্যক্তির আভিজাত্য ও পদমর্যাদা প্রদর্শনের বস্তু।

একসময় পুণ্যাহ উৎসবে, বাইজি নাচে, ভোজ অনুষ্ঠানে হুঁকা পরিবেশন ছিল অপরিহার্য। বর্তমানে সমাজকাঠামো, অর্থব্যবস্থা ও প্রযুক্তি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে হুঁকায় ধূমপান ব্যবস্থারও বিশেষ পরিবর্তন ঘটেছে। বর্তমানে হুঁকার অনেকটা আধুনিক সংস্করণ হচ্ছে সিসা। তবে গ্রামাঞ্চলে এখনো হুঁকা ধূমপানের ক্ষেত্রে তার প্রাধান্য বহাল রেখেছে।

Google Adsense Ads

হুঁকার মাধ্যমে ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এর ধোঁয়া শরীরের জন্য সংক্রামক রোগ সৃষ্টি করে।

Google Adsense Ads

Leave a Comment