অষ্টম শ্রেণির বাংলা সাহিত্য কণিকা বইয়ের ‘আবার আসিব ফিরে’ কবিতায় ঘুঙুরের উল্লেখ আছে

 

https://jobspointbd.com/

My Ads

Google Adsense Ads

ঘুঙুর (Ghungroo) হলো সুতায় গাঁথা এক প্রকার পাতলা ও ছোট্ট ঝুমকার মালা। বাংলা ভাষায় একে ঘুঙ্গুর, ঘুমুর, মিঞ্জিনী, কিঞ্জিনী, নূপুর প্রভৃতি নামেও ডাকা হয়। এটি পিতলের ছোট ছোট এক গুচ্ছ বল বা ঘণ্টা মোটা সুতায় গেঁথে তৈরি করা হয়।

পায়ের অলংকারবিশেষ এটি একটি চরণবাদ্য। প্রধানত নাচের তালবাদ্য হিসেবে ঘুঙুরের ব্যবহার আছে, তবে দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য সার্কাসের জোকার, বহুরূপী, ফেরিওয়ালা ও খেমটাওয়ালারাও ঘুঙুর ব্যবহার করে।

বাংলাদেশি, নেপালি ও ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যের নৃত্যশিল্পীরা শরীরে, বিশেষ করে পায়ের গোড়ালিতে ঘুঙুর পরে নৃত্য প্রদর্শন করে থাকে।

ঘুঙুরের শব্দ ঝুমকার ধাতব গঠন ও আকারের ওপর নির্ভর করে, যার ফলে একেক ঘুঙুরের শব্দও একেকরকম হয়। ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যের মধ্যে ভরতনাট্যম, কত্থক, কুচিপুড়ি, মোহিনী অট্টম, ওড়িশি ও অন্যান্য নৃত্য যেমন— লাবণিতে ঘুঙুর পরা হয়।

নেপালের লোক-নৃত্যশিল্পীদের ব্যবহার করা ঘুঙুরকে চেপ বলা হয়। এতে ৯টি থেকে ২৭টি পাতলা ব্রোঞ্জের বা পিতলের ঝুমকা থাকে, যা প্রায় ২৩ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ৭.৫ সেন্টিমিটার প্রস্থের কাপড়ে সেলাই করা থাকে। নেপালিরা গানের ধরন অনুসারে বিভিন্ন চেপ বাছাই করে থাকে। ঝুমকাগুলোকে তারা ঘুনগুরু (ঘুংগুরু) বলে।

ভারতীয় শাস্ত্রীয় কত্থকনৃত্য প্রদর্শক ভি অনুরাধা সিং ঘুঙুরকে মুখ্য বাদ্যযন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে এক প্রকার সংগীতশৈলী বিকশিত করেন। একে ঘুঙুর বাদনশৈলী বলে।

তিনি বহু সংগীত উৎসবে তা প্রদর্শন করেন এবং প্রশংসিত হন। ঘুঙুর বাদনে শুধু পায়ের নড়াচড়া ও চলাচলের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

বর্তমানে নাচে ঘুঙুরের ব্যবহার বেশি দেখা গেলেও একসময় সম্ভ্রান্ত পরিবারের বাঙালি মেয়ে ও বধূরা এক ধরনের পাতলা ঘুঙুর পরত। এই পাতলা ঘুঙুর নূপুর হিসেবে বাঙালিদের কাছে বেশি পরিচিত। আলতা পায়ে নূপুর বাঙালি মেয়েদের একটি পছন্দের বিষয়; কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে ঘুঙুর প্রথমে অলংকার হিসেবে ব্যবহার করা হতো না। এটা ছিল এক ধরনের বাঁধন।

যখন দাসপ্রথা চালু ছিল, তখন দাসক্রেতা নতুন দাস কেনার সঙ্গে সঙ্গেই তার পায়ে পরিয়ে দিত ঘুঙুর লাগানো বেড়ি, যা দাসের প্রতিটি পদক্ষেপের সঙ্গে সঙ্গে বাজত। কোনো দাস পালিয়ে যেতে চাইলে তার ঘুঙুর দ্রুতলয়ে বেজে উঠত এবং মালিক টের পেয়ে যেত। পরিণামে দাসের কপালে জুটত চরম শাস্তি।

J.S.C

Google Adsense Ads

Google Adsense Ads

2 thoughts on “অষ্টম শ্রেণির বাংলা সাহিত্য কণিকা বইয়ের ‘আবার আসিব ফিরে’ কবিতায় ঘুঙুরের উল্লেখ আছে”

Leave a Comment