অপরিচিতা গল্প এবং বাস্তব দৃষ্টান্তের ভিত্তিতে নারীর এগিয়ে চলার পথে সহায়ক ভূমিকা চিহ্নিত করণ

“অপরিচিতা গল্প” এবং বাস্তব দৃষ্টান্তে নারীর এগিয়ে চলার পথে সহায়ক ভূমিকা

পরীক্ষা প্রস্তুতি এইচ এস সি

Google Adsense Ads

অপরিচিতা গল্প এবং বাস্তব দৃষ্টান্তের ভিত্তিতে নারীর এগিয়ে চলার পথে সহায়ক ভূমিকা চিহ্নিত করণ

উত্তর সমূহ:

হাত জোড় করিয়াছি, মাথা হেঁট করিয়াছি; শম্ভুনাথবাবুর হৃদয় গলিয়াছে। কল্যাণী বলে, “আমি বিবাহ করিব না।”

: আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “কেন।”

সে বলিল, “মাতৃ-আজ্ঞা।”

কী সর্বনাশ। এ পক্ষেও মাতুল আছে নাকি।

তার পরে বুঝিলাম, মাতৃভূমি আছে। সেই বিবাহ-ভাঙার পর হইতে কল্যাণী মেয়েদের শিক্ষার ব্রত গ্রহণ করিয়াছে।

নারীর এগিয়ে চলার পথেসাথি হলো শিক্ষা

অপরিচিতা গল্পে সেই অপরিচিতা মেয়ে কল্যাণীর বিয়ে ঠিক করা হয় উচ্চশিক্ষিত কিন্তু ব্যক্তিত্বরহিত এবং পরিবারতন্ত্রের কাছে অসহায় পুতুল মাত্র অনুপমের সাথে। অনুপমের আসল অভিভাবক তার মামা, যিনি সব সময় চাইতেন অনুপমের এমন পরিবারে বিয়ে হোক যাদের আর্থিক অবস্থা বেশ ভালো না হলেও যৌতুক দিতে কৃপণতা করবে না। শম্ভুনাথ সেন অর্থাৎ কল্যাণীর বাবা ঠিক তেমনই ছিলেন। তাও পণের পরিমাণে ঠকে যান কিনা তা দেখতে অনুপমের মামা বিয়ে বাড়িতেই সেকরা নিয়ে হাজির হন।

মেয়ের গয়না সব পরখ করে তিনি বুঝতে পারেন তাতে কোনো খাদ নেই। সেই সময় তিনি সব গয়নার তালিকাও করে নিয়েছিলেন, পাছে মেয়ের বাবা কোন গয়না লুকিয়ে না ফেলে। যা ছিল মেয়ের বাবার কাছে খুবই অসম্মানের।

ফলে কল্যাণীর বাবা শম্ভুনাথ সেন এরকম যৌতুক নিয়ে চরম অবমাননাকালে কন্যা সম্প্রদান অসম্মতি জানান এবং বিয়ে ভেঙে দেন। এ নিয়ে শম্ভুনাথ সেন এর কোন আক্ষেপ ছিল না।

এরপর প্রায় চার বছর কেটে যায়। আর এই চার বছরে কল্যাণী পড়াশুনা করে দেশমাতৃকার সেবায় আত্মনিয়োগ করেছে। মেয়েদের শিক্ষা গ্রহণ করেছে। আর তার এসব বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের জাগরণ এবং শুচিশুভ্র আত্মপ্রকাশ ভবিষ্যতের নতুন নারীর আগমনে ইঙ্গিতেরই পরিসমাপ্তি।

অপরিচিতা গল্পে আমরা দেখেছি, যৌতুকের ব্যাপারে অনুপমের মামার ভূমিকা সব সময় নেতিবাচক ছিল। কিন্তু, অনুপম শিক্ষিত ছেলে হয়েও কোন প্রতিবাদ জানায়নি। বরং সব অন্যায় দেখেও চুপচাপ ছিলো। অর্থাৎ যৌতুকের বিরুদ্ধে তার কোনো ভুমিকা ছিল না।

এ বিষয়ে তার ভূমিকা ইতিবাচক হলে তাহলে তারা বিয়েতে বাধার সৃষ্টি হতো না। সুন্দরভাবে বিয়ে সম্পন্ন হলে কল্যাণী এবং অনুপম দুজনেই একটা সুস্থ সুন্দর জীবনের সম্ভাবনায় এগিয়ে যেতো। বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার জন্য সমাজের চোখে নিচু হতো না। আর এভাবে সবাই যৌতুকের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ালে একসময় সমাজ থেকে যৌতুকপ্রথা উঠে যেত।

আমার চেনা একজন নারী আছেন যাকে খুব অল্প বয়সেই তার বাবা মা বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন অনেক টাকা যৌতুক দিয়ে।

কিন্তু তিনি পড়াশোনা করে নিজে প্রতিষ্ঠিত হতে চেয়েছিলেন বলে এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান এবং বিয়ে ভাঙ্গতে সমর্থ হন। তারপর থেকে সমাজের মানুষের নানান কথা, পরিবারের চাপের মুখে পড়েও তিনি পড়াশোনা চালিয়ে যান। আজ তিনি প্রতিষ্ঠিত একজন নারী, যাকে দেখলে সমাজের মানুষ এখন কুর্নিশ করে এবং তার বাবা মাও তাদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। তিনি এখন নিজে বাল্যবিবাহ, যৌতুকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন এবং নারীদের শিক্ষায় এগিয়ে এসেছেন।

পঠিত গল্প “ অপরিচিতা” এবং আমার চেনা নারীর এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা থেকে আমরা বুঝতে পারি, তাদের জাগরণে সহায়ক ভুমিকা ছিল শিক্ষা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়ানো। তারা উভয়েই যৌতুক প্রথার নির্মম বলি হয়ে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে। তারা দেশচেতনায় হৃদ্ধ ব্যাক্তিত্ব নিয়ে জাগরিত হয়েছে।

নারী জাগরণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শিক্ষা। যা নারীদের আত্মসচেতন করবে, সমাজের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে শেখাবে। যা তারা দুজনেই করে দেখিয়েছে।

Google Adsense Ads

সুতরাং, উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে গল্প এবং আমার চেনা ব্যক্তির জীবনচরিত থেকে আমরা বুঝতে পারি নারীর এগিয়ে চলায় সবচেয়ে সহায়ক ভুমিকা রাখে “শিক্ষা”।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

Google Adsense Ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *